নিশ (Niche) কি? কিভাবে আপনার ব্লগের জন্য একটি উপযুক্ত নিশ সিলেক্ট করবেন?

একজন নতুন ব্লগার (blogger) অথবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার (Affiliate Marketer) হিসেবে কোন নিশ (Niche) কিংবা টপিক আপনার জন্য বেস্ট হবে। হ্যা বন্ধুরা আজকে আমরা এই বিষয় গুলো জানবো যে নিশ কি, কোন নিশ বাছাই করলে আপনি দ্রুতই একজন সফল ব্লগার হয়ে উঠতে পারবেন।

নিশ (Niche): কোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইটে লেখালেখি করার জন্য প্রত্যকটি ক্যাটাগরি কে আলাদা আলাদা ভাবে একটি নিশ বা টপিক বলে।


আমরা সকলেই ব্লগ খুলে একটি ডোমেইন তো সেট করে ফেলতে পারি কিন্তু তারপর আর ব্লগকে আগাতে পারিনা। কারন আমরা নিদিষ্ট টপিক কিংবা নিশ পছন্দ করি না। ফলে এলোপাথাড়ি কিছু বিষয় নিয়ে লেখালেখি করার পর আর নতুন কোনো টপিক খুজে পাইনা এবং ভিসিটররাও একটা বিষয়ে সম্পর্কে পুরোপুরি তথ্য না পেয়ে আপনার ওয়েবসাইট পড়া ছেড়ে দেয়। ফলে আপনি একজন ব্যর্থ ব্লগারে পরিণত হন।

choose- better-Niche-blogging

আবার আমরা সকলেই কোনো টপিক পছন্দ করতে হলে হয় টেকনোলজির (Technology) এই বিশাল মাঠটাকে পছন্দ করি কিংবা হেলথ (Health) রিলেটেড কোনো বিষয় পছন্দ করে ফেলি।

কিন্তু এটা ভাবিনা যে এসব বিষয়ে এতো এতো আর্টিকেল লেখা আছে আমি কি পারবো তাদের সাথে কম্পিটিশন করে। ফলে কিছুদিন খুব ভালোভাবে লেখালেখি করার পরও যখন ওয়েবসাইট র‍্যঙ্ক হয়না তখন আশাতীত হয়ে আমরা ব্লগিং করা ছেড়ে দেই, যে নাহ এসব আমাকে দিয়ে হবে না। কিন্তু আমরা কখনো এর পিছনে ভুলটাকে খোজার চেষ্টা করিনা।

তাই একটি ওয়েবসাইট (Website) কে ভাল পর্যায়ে নিয়ে যেতে এবং একটি সফল ব্লগিং (blogging) ক্যারিয়ার পাওয়ার জন্য উপযুক্ত একটি নিশ পছন্দ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে একটি উপযুক্ত নিশ (Niche) বাছায় করা যায়।

আপনারা যারা এই টপিক টি পড়ছেন তাদের মধ্যে অনেকেই আছে কোনো না কোনো বিষয়ে দক্ষ আবার এমনও অনেকেই আছেন যারা একেবারে কিছু জানেন না কিন্তু শেখার চেষ্টা করছেন।
তো আমি এই দুই ধরনের মানুষের জন্য দুরকম ভাবে সাজেশন দিব যাতে করে সকলেই বুঝতে পারেন কিভাবে নিশ বাছায় করতে হয় এবং এটা কতটা গুরুপ্তপূর্ণ।

শুরুতেই আমি তাদের জন্য বলব যারা কোনো না কোনো বিষয়ে দক্ষ অথবা ইতিমধ্যে শিখে ফেলেছেন। যেমন অনেকেই আছেন গ্রাফিক্স ডিজাইন কিংবা সফটওয়্যার ডিজাইন কিংবা ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপার কিংবা ভিডিও এডিট সম্পর্কে দক্ষ। যাদের এরকম কোনো না কোনো বিষয়ের উপর দক্ষতা আছে তাদের উদ্দেশে বলব আপনাদের আর আলাদা করে নিশ পছন্দ করার দরকার নেই। যেমন আপনি যদি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন কিংবা একজন ডাক্তার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি হেলথ ক্যাটাগরিটাকে বেছে নিন এবং সে সম্পর্কেই লেখালেখি শুরু করে দিন কারন আপনি ইতিমধ্যে এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে ফেলেছেন।
আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হইন বা একজন সফটওয়্যার কিংবা ওয়েব ডিজাইনার হইন তাহলে সেই বিষয়টা নিয়েই একটি ব্লগ খুলে ফেলুন এবং এই বিষয় গুলো নিয়েই সেখানে আর্টিকেল পাবলিশ করতে থাকুন।
আপনি হইতো অনেক কিছু শিখছেন এবং কোন প্রতিষ্ঠানে জব করছেন কিংবা ফ্রিলান্সিং করছেন কিন্তু এর পাশাপাশি অবসর সময় থাকে কিংবা অনেকেই ফ্রিলান্সিং এ যে একরকম কাজ পাবেন তাও নই অনেকেই আছেন কাজের চাপ সামলাতে পারছেন না, আবার অনেকেই আছেন কাজ করার মতো কাজ খুজে পাচ্ছেন না কিন্তু আপনার মধ্যেও যথেষ্ঠ দক্ষতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী একটি ব্লগ খুলে ফেলুন এবং সেসব বিষয় নিয়ে লেখালেখি শুরু করে দিন।
যেমন আমি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয় নিয়ে একটা উদাহরণ দেই তাহলে ধরুনঃ
  • কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন করতে হয়?
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো শেখার জন্য কোন কোন বিষয় গুলো মাথায় রাখা উচিত?
  • কি কি রিসোর্সগুলো প্রয়োজন হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য?
  • গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য কোন কোন কালার কম্বিনেশন গুলো সবচেয়ে বেষ্ট হবে?
  • কালার কম্বিনেশন পছন্দ করার জন্য কোন কোন টুলস গুলো ব্যবহার করলে ভালো হতে পারে।
  • Photoshop কে কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে?
  • Illustration কে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
  • এসব সফটওয়্যার গুলোর টুলস গুলোর পরিচিতি সম্পর্কে জেনে নিন।

এরকম হাজার টপিক আছে গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে। শুধুমাত্র গ্রাফিক্স ডিজাইন না সকল বিষয়ের উপরই এমন অনেক অনেক টপিক আছে আর আপনি যেই বিষয়গুলো পারেন সে গুলোর উপর সহজেই এমন অনেক টপিক খুজে বের করে ফেলতে পারবেন।

Blog is all about Helping. তাই যতো পারেন কোন বিষয় নিয়ে টিউটোরিয়াল দিন, অন্যদেরকে সহযোগীতা করুন। আপনি যত বেশি মানুকে সাহায্য করতে পারবেন আপনার ওয়েবসাইটে ততো বেশী মানুষ আসবে।


একটা কথা চিন্তা করুন আপনি কেন আমার এই আর্টিকেল টি পড়ছেন কেন আমার ব্লগটিকে ভিসিট করছেন নিশ্চয় আমি আপনাদের কিছু দিচ্ছি সে জন্য, কোনো বিষয়ে সাহায্য করছি সে জন্যই আপনি এখানে এসেছেন। এখন আপনি যদি আমার ওয়েবসাইটে এসে কোনো সাহায্য না পেতেন তাহলে  এতোক্ষন ধরে এসব লেখাগুলো কখনোই পড়তেন না। এরকমই সারাদিনে আপনি যত ওয়েবসাইট ভিসিট করেন যতগুলো আর্টিকেল পড়েন সেগুলো আপনারই প্রয়োজনে হইতো আপনি এখান থেকে কিছু শিখছেন অথবা তারা আপনাকে ইন্টারটেইন করাচ্ছে।
তো ব্লগিং ব্যাপারটাই এরকম আপনাকে কিছু দিতে হবে। আপনি যত বেশি তাদেরকে দিতে পারবেন যত বেশি তাদের কে সাহায্য করতে পারবেন আপনার ব্লগ ততোবেশি উন্নতি করবে।

এতোক্ষন তো দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে কথা কথা বললাম যে যারা ইতিমধ্যে কোনো বিষয় জানে এবং তারা কিভাবে ব্লগিং শুরু করতে পারে। এখন আশা যাক যারা একেবারেই নতুন এবং কোনো বিষয়ে তেমন জানেন না কিন্তু শিখতে চাচ্ছেন তবে বুঝে উঠতে পারছেন না কোন বিষয় নিয়ে শুরু করবেন।

তো যারা একেবারেই নতুন কিংবা কোন বিষয়েয় কোন দক্ষতা নেই তাদের মধ্যে এই চিন্তাগুলো খুব বেশি দেখা যায় যেঃ-
  • আমি কোন নিশটা পছন্দ করব।
  • কোন নিশটা ভালো প্রফিটেবল হবে।
  • কোন নিশটা সিলেক্ট করলে আমি অল্প সময়েই সফল হতে পারব।
এসব বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে তারা ব্লগিং টাকে আর শুরু করতে পারে না। তো তাদের জন্য আমার একটাই সাজেশন থাকবে আপনি এসব নিশ পছন্দ করা, ব্লগে এডসেন্স এপ্রুভাল করা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটের লিংক পুট করা এসব একেবারেই ভুলে যান। আপনি যা পারেন কিংবা যেগুলো আপনি শিখছেন সে গুলো সম্পর্কেই ব্লগে আর্টিকেল পাবলিশ করে দিন। যদিও ব্লগিং এর জন্য একটি ভালো নিশ পছন্দ করা খুবই প্রয়োজন কিন্তু নিশ পছন্দ করার গোলকধাধায় আটকাই গিয়ে আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার আর গড়ে উঠবেনা। আর যদি প্রফিটেবল এর কথা চিন্তা করেন তাহলে প্রত্যেকটি টপিক এর ডিমান্ড আছে। এমন কি যত দিন যাচ্ছে নতুন নতুন অনেক টপিক আসছে যেগুলোর কোন অস্তিত্বই ছিলো না ইন্টারনেটে কিন্তু আসার পর ভালো ভ্যালুঅ্যাবল টপিক হয়ে উঠেছে।
সে জন্যই আপনি যে বিষয়ই সিলেক্ট করেন না কেন ব্লগিং টাকে গোড়া থেকে শুরু করুন। আর এসব গুগল এডসেন্স অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এসব ব্লগিং এর অনেক এডভান্স পর্যায়।

তো নতুনদের উদ্যেশে ব্লগিং নিশ পছন্দ করার জন্য আমার পরামর্শ হল যে আপনি যে বিষয় গুলো পারেন কিংবা শিখছেন হতে পারে বিষয় খুবই সহজ অনেক ছোট আমি বলব সে বিষয়গুলোর উপর কন্টেন্ট লিখে আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে দিন। যেমনঃ-
  • কিভাবে Youtube এ একটি চ্যানেল খুলতে হয়।
  • কিভাবে Youtube চ্যানেল কে কাস্টমাইজ করতে হয়।
  • কিভাবে চ্যানেলের জন্য লোগো বানাতে হয়।
  • কিভাবে Photoshop এর মাধ্যমে একটি ছবি ডিজাইন করা যায়।
  • কিভাবে Blogger দিয়ে নিজের একটি ব্লগ তৈরি করা যায়।
  • কিভাবে একটি ব্লগকে কাস্টমাইজ করতে হয়।
  • কিভাবে ভিডিও ইডিট করতে হয়।
  • কিভাবে ভিডিও ইডিট এর সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করা যায়।
  • কিভাবে ফেসবুকে একটি পেজ ক্রিয়েট করতে হয়।
  • কিভাবে সেই পেজ-এ প্রোফাইল পিক, কভার পিক ইত্যাদি যুক্ত করা যায়।
  • কিভাবে ফেসবুকে গ্রুপ তৈরি করতে হই ইত্যাদি।


এসব ছোট ছোট বিষয় গুলো দিয়েই আপনার কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করে দিতে পারেন। এগুলো হইতো আপনাকে অ্যাফিলিয়েট লিংক পেতে সাহায্য করবে না। কিন্তু কিভাবে কন্টেন্ট লিখতে হই সে বিষয়ে আপনি ভালো ধারনা পেয়ে যাবেন। এবং এই টপিকগুলো নিয়ে লেখা শুরু করলে দেখবেন আরো অনেক এরকম টপিক নিজেই খুজে বের করে ফেলতে পারছেন যা পরবর্তীতে একটি ভালোমানের নিশ বাছাই করতে দারুন ভাবে সাহায্য করবে আপনাকে।
দেখুন এই আর্টিকেলে আমি এসব না বলে হাজারটা নিশ তুলে ধরতে পারতাম কিন্তু তাতে আপনার কোন লাভ হতো না। বরং নিজে লেখালেখির অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং নিজের Passion অনুযায়ী একটি নিশ সিলেক্ট করুন।
সবশেষে, আপনি দক্ষ হন কিংবা নতুন নিশ সিলেক্ট করার সময় অবশ্যই একটা কথা মাথায় রাখবেন Low Compitition. যেমন  কাউকে যদি একটি রিভিউ টাইপের উপর ব্লগ খুলতে বলা হয় তাহলে বেশির ভাগই হইতো মোবাইল/স্মাটফোন রিভিউ ওয়েবসাইট খুলে বসে কিংবা ল্যাপটপ/পিসি নিয়ে রিভিউ সাইট খুলে বসে। কিন্তু এগুলোতে কম্পিটিশন অনেক হওয়াতে সাকসেস পেতে বেশ বেগ পেতে হয় সেক্ষেত্রে আপনি হইতো স্মাটফোন কিংবা ল্যাপটপ এর কিছু এক্সসেসোরিস রিভিউ নিয়ে ব্লগ খুলতে পারেন। সেক্ষেত্রে হইতো তুলনামুলক অনেক কম কম্পিটিশন পাবেন এবং দ্রুত আপনার ব্লগ র‍্যাঙ্ক করাতে পারবেন।

আশা করি এটার পর আর নিশ সিলেক্ট নিয়ে কোনো টিউটোরিয়াল কোন টিপস পড়ার কোন দরকার পড়ে না। তারপরও যদি কোনো কিছু বুঝতে  সমস্যা হয় কিংবা নিশ সিলেক্ট করা নিয়ে কোন কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আজকে এপর্যন্তই ভালো থাকবেন সবাই।