ধনী হওয়ার উপায়: অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায়!

এই মহাবিশ্বে মানুষের সবচাইতে বেশি যে জিনিসটির প্রয়োজন সেটি হচ্ছে টাকা। কাজেই সমাজে যশ ও খ্যাতি অর্জনের জন্য টাকা কামানোটা হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু টাকা কামানোর চাইতে আরো গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে টাকা জমানো বা সঞ্চয় করা। আর টাকা সঞ্চয় করার চাইতে আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঞ্চয়কৃত টাকা সঠিক রাস্তায় ইনভেস্টমেন্ট করা। আপনার কষ্টে অর্জিত টাকা থেকে কিছু পরিমানে টাকা সঞ্চয় করে সেই টাকা সঠিক রাস্তায় স্মার্টলি ইনভেস্ট করতে পারলে, আপনিও একদিন নিজেকে কোটিপতির কাতারে নিয়ে যেতে সম্ভব হবেন।

আজকের পোস্টের হেডিংয়ে “অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায়” লেখাটি দেখে আপনি হয়ত মনে মনে হাসছেন! সেই সাথে নিশ্চয় ভাবছেন যে, এই সব কি ধরনের ফাজলামির জিনিস নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এই বিষয়টি দেখে আপনি হাসুন বা যাই মনে করুন, আমি বলব আপনার জীবনের অনেক সময় ফেসবুক ও ইউটিউবে ভিডিও দেখে নষ্ট করেছেন। এই পোস্টটিতে না হয় আরো পাঁচটা মিনিট নষ্ট করেন। এই পোস্টে কি আছে একটু জেনে যান।
ধনী হওয়ার উপায়: অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায়!



ধনী হওয়ার জন্য এখানে আমি আপনাদের কোন ধরনের রকেট সাইন্স বলব না, কিংবা অসম্ভব বা অবাস্তব কিছু বলব না। বাস্তবতার নিরিখে যার যার অবস্থান থেকে কিভাবে নিজের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন করে নিজের আর্থিক অবস্থানকে আরেকটু উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, সেই বিষয়ে আলোচনা করব। এ ক্ষেত্রে যার যার অবস্থান বেদে কেউ কোটিপতি আর কেউ লাখপতি হতে পারবেন।

এগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে - 
এখানে আমি এমন কোনো উপায় অবলম্বন করার কথা বলব না যে, আপনি চাইলে একদিনে বা এক মাসে নিজের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন করে বিলিয়নার হয়ে যাবেন। আমি আপনাকে কোন ধরনের লোভনীয় আশ্বাস দেব না, যেটা কখনো সম্ভব নয়। তবে এটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, এই পোস্টটি পড়লে অন্তত টাকা পয়সার বিষয়ে আপনি একজন সচেতন নাগরিক হয়ে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার অনেকাংশে পরিবর্তন করতে পারবেন।

যেহেতু আজকের পোস্টে অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায় নিয়ে কথা বলছি সেহেতু আদৌ কি অল্প বয়সে কেউ কোটিপতি হতে পেরেছে কি না, প্রথমে সেটি দেখা নেওয়া যাক। আর কেউ যদি অল্প বয়সে কোটিপতি হয়ে থাকেন, তাহলে তারা কিভাবে কোটিপতি হয়েছেন এবং কোটিপতি হওয়ার জন্য কি ধরনের কাজ বা পরিশ্রম ও মেধা খরছ করেছেন, সেটা একবার হলেও জেনে নেওয়া দরকার।

বিশ্বের সবচাইতে কম বয়স্ক ৫ জন কোটিপতি

এই পৃথিবীতে কম বয়স্ক অহরহ কোটিপতি রয়েছেন। আমরা এখানে সবার পরিচিতি ও কর্মকান্ড তুলে ধরতে পারব না। তবে সবার মধ্যে সবচাইতে অল্প বয়স্ক বিলিয়নার হয়েছেন, এমন কয়েকজনের জীবন বৃত্তান্ত ও তাদের কোটিপতি হওয়ার পিছনে কি করতে হয়েছে, সেই বিষয়ে সংক্ষেপে ধারনা দেওয়ার চেষ্টার করব।

১। কাইলি জেনার

কাইলি জেনার একজন মার্কিন রেয়ালেটি টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, মডেল, অভিনেত্রী, উদ্যোক্তা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব এবং সামাজিক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। তিনি ৯ বছর বয়স থেকে টেলিভিশন চ্যানেলের রেয়ালেটি টেলিভিশন সিরিজ “কিপিং আপ উইথ দ্য কার্দাশিয়ান্স” এর একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবে সবার নিকট পরিচিত। তার নিজেস্ব ব্রান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী এবং সামাজিক গণমাধ্যমে তার অতিশয় উপস্থিতির জন্য বহুল পরিচিত।

তিনি ১৯৯৭ সালে ১০ই আগস্ট জনগ্রহন করেন। সেই হিসাবে তার বর্তমান বয়স এখনো মাত্র ২২ বছর। এই ২২ বছর বয়সে তিনি ১ বিলিয়ন এর অধিক মার্কিন ডলারের মালিক। এই বয়সের যেখানে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির দ্বারা যেটি সম্ভব নয় তিনি মাত্র ২২ বছরে সেটি সম্ভব করে দেখিয়েছেন।

২০১৭ সালে তিনি জেনারের নাম ফোর্বস সেলেব্রেটি ১০০ এর তালিকায় স্থান পান, যেখানে তিনি সবচেয়ে কনিষ্ঠ বিলিয়নার ব্যক্তি হিসেবে এই তালিকায় নিজের স্থান করে নেন। তার আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে তার নিজের নামের কসমেটিক কোম্পানি। যেটি শুরুর দিকে তিনি নিজেই উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেছেন।
কাইলি জেনার

২। আলেক্সান্দ্রা অ্যান্ড্রেসেন ও ক্যাথারিনা অ্যান্ড্রেসেন

আলেক্সান্দ্রা অ্যান্ড্রেসেন ও ক্যাথারিনা অ্যান্ড্রেসেন আপন দুই বোন। কাইলি জেনার এর আগে তারা দুই বোন ছিলেন পৃথিবীর সবচাইতে কনিষ্ঠ কোটিপতি। এই দুই বোন নরওয়ে এর অধিবাসী। তারা দুই বোন শেয়ার মার্কেটে শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে সবচাইতে কনিষ্ঠ কোটিপতির তালিকায় স্থান করে নেন। বর্তমানের তারা প্রত্যেকে ১.১ বিলিয়ন ডলার এর মালিক।
আলেক্সান্দ্রা অ্যান্ড্রেসেন ও ক্যাথারিনা অ্যান্ড্রেসেন

৩। এলিজাবেথ ফার্টওয়েঙ্গলার

এলিজাবেথ ফার্টওয়েঙ্গলার একজন জার্মান নাগরিক। তার বর্তমান বয়স মাত্র ২৮ বছর। এই বয়সে তিনি ১.২ বিলিয়ন মার্কি ডলার এর মালিক। তিনি একটি মিডিয়া কোম্পানির পরিচালক। ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে কাজ করে তিনি এই বিশাল অংকের মালিক হয়েছেন।
এলিজাবেথ ফার্টওয়েঙ্গলার

৪। মার্ক জুকারবার্গ

ফেসবুক এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গকে চিনে না এমন লোক খুব কম আছে। তিনি একজন আমেরিকান কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার। তার আসল পরিচিতি হল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট ফেইসবুক প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। তিনি বর্তমানে ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রেসিডেন্ট।

মার্ক জুকারবার্গ যখন তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তখন তিনি এবং তার কয়েকজন সহপাঠী মিলে ২০০৪ সালে এটিকে একটি ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই জাকারবার্গ টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে বছরের সেরা ব্যক্তিত্বরূপে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার বর্তমান বয়স ৩৫ বছর। বর্তমানে তিনি ৫৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এর মালিক। একসময় তিনি বিশ্বের সবচাইতে কনিষ্ঠ বিলিয়নার ছিলেন।
মার্ক জুকারবার্গ

৫। ফেলিক্স কেজেলবার্গ

ফেলিক্স কেজেলবার্গ একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার। তার ইউটিউব চ্যানেলের নাম PewDiePie. যেটি একটি গেমিং ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউবে ভিডিও গেম খেলে মানুষকে আনন্দ দেওয়াই হচ্ছে তার কাজ। জনপ্রিয়তার তালিকায় তার ইউটিউব চ্যানেলটি বিশ্বের মধ্যে ২য় স্থান অধিকার করে নিয়েছে। এমনকি ইউটিউবের ইতিহাসে তার ইউটিউব চ্যানেলে সর্বপ্রথম ১০০ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবা এর মাইল ফলক স্পর্শ করেছিল। 

তিনি ১৯৮৯ সালে সুইডেনে জন্মগ্রহন করেন। সেই হিসাবে তার বর্তমান বয়স মাত্র ৩০ বছর। তার আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে ইউটিউব। এ ছাড়া তার বিভিন্ন ধরনের গেমিং কোম্পানি রয়েছে। বর্তমানে তিনি ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডালারের মালিক। তার আয়ের দুই তৃতীয়াংশ ইউটিউব হতে আসে।
ফেলিক্স কেজেলবার্গ

ধনী হওয়ার জন্য কী কী প্রয়োজন?

উপরের ৫ জন কোটিপতির কেউই পরিশ্রম ও মেধা ছাড়া অল্প বয়সে কোটি হয়ে যাননি। কোটিপতি হওয়ার পিছনে তাদের মেধা, দক্ষতা ও শ্রম রয়েছে। এই ৫ জনের জীবন বৃত্তান্ত পড়লে আপনি  জানতে পারবেন যে, তারা শুরুর দিকে বিলিয়নার ছিল না। সবাই খুব ক্ষুদ্র পরিষরে অল্প টাকায় ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

ফেলিক্স কেজেলবার্গ শুরুর দিকে মোবাইল দিয়ে ভিডিও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তিনি এখন একজন বিলিয়নার। কাজেই টাকা থাকলেই যে কেউ বড়লোক হতে পারে না। বড়লোক হওয়ার জন্য টাকা কিভাবে ইনভেস্ট করতে হবে, সে বিষয়ে সঠিক দক্ষতা থাকতে হবে। এ বিষয়ে আমরা নিচে আলোচনা করব। অল্প বয়সে ধনী হওয়ার জন্য নিচের অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন-

১। কাজের প্রতি মনোযোগি হওয়া

যে কোন কাজের ভালো ফলাফল আশা করতে হলে আপনাকে সেই কাজটি অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে করতে হবে। ছয় নয় করে কোন কাজ করলে সেই কাজ আপনাকে সফলতার পথ দেখাতে পারবে না। আপনি লেখা পড়া করুন, আর ব্যববসা করুন কিংবা অন্য যেকোন কাজ করুন, কাজে সফলতা আনার জন্য অবশ্যই আপনাকে সেই কাজের প্রতি প্রচুর পরিমানে মনোযোগ দিতে হবে।

যখন কোন কাজের প্রতি আপনার আন্তরিকতা থাকবে তখন সেই কাজটি সঠিকভাবে করার পাশাপাশি কাজটাকে উপভোগ করতে পারবেন। আপনি যে কাজই করুন না কেন, তা যদি কঠোর পরিশ্রমের সঙ্গে করেন, তাতে আজ নয়তো কাল সফলতা আসবেই।

২। লক্ষ্যে অটুট থাকুন

সফলতা পেতে হলে আগে নিজের লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে। আপনি ভবিষ্যতে কি করতে চান, কি হতে চান, সেটি ঠিক করতে না পারলে আপনি লক্ষ্য বিহিন অবস্থায় কোথাও ঠেকাতে পারবেন না। দাড় ছাড়া নৌকার মত নৌকা বয়ে নিলে আপনি শুধু ঘুরপাক খেতে থাকবেন, কখনো নিজের গন্তব্যে পৌছতে পারবেন না। 

নিজের লক্ষ্যই যদি আপনার কাছে অস্পষ্ট হয়, তাহলে তো তাকে ছোঁয়া কখনই সম্ভব নয়। লক্ষ্য ছাড়া সাফল্যের শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছানো সম্ভব নয়। লক্ষ্যই হচ্ছে সাফল্যের সিঁড়ি সরূপ। লক্ষ্যই সাফল্যের ভিত্তি স্থাপন তৈরী করে দেয়। বলা যেতে পারে সাফল্যের নীল নকশা। তাই সাফল্যের স্বর্ণশিখড়ে নিজেকে আবিষ্কার করতে হলে নিজের লক্ষ্যের বিষয়ে স্পষ্ট হতে হবে।

৩। একই লক্ষ্যে ছুটে চলবেন না

আমরা বাঙ্গালিরা খুব অলস জাতি। এ কথাটি বলতে নিজের কাছেও লজ্জা লাগে। আমরা সবাই একতরফা চাকরি খুঁজায় ব্যস্ত থাকি। কোন রকম একটা সরকারী চাকরি পেলেই আর কোনকিছু করার প্রয়োজন মনেকরি না। সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত রুটিন চাকরি করে নিজেকে খুব ব্যস্ত মানুষ হিসেবে ধরে নেই। মাস শেষে চাকরির টাকা পেলে গুনে গুনে মাস পার করতে পারলেই নিজেকে সফল ব্যক্তি মনেকরি। 

অথচ যারা চাকরি করছেন, তরা চাইলে চাকরির পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের কাজ করতে পারেন। আপনি একজন রুটিন চাকরিজীবি হলে চাকরি পরবর্তী সময়ে ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারেন। আপনি একজন শিক্ষক হলে ছাত্রদের টিউটর হয়ে মাসে কিছু এক্সট্রা পকেট মানি আয় করে নিতে পারেন।

এভাবে যে বিষয়ে আপনার দক্ষতা আছে সেই বিষয়কে চাকরি টাইমের পরে কাজে লাগাতে পারেন। বর্তমানে অনলাইন মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয়। আপনি সেগুলোতে কাজ করতে পারেন। কেন শুধু শুধু মাসের এক তারিখ আসার অপেক্ষায় চেয়ে থাকবেন?

৪। টাকা আয়ের নিত্য নতুন উপায় খুঁজুন

আমি আবারো বলছি, শুধুমাত্র একটি চাকুরী করে কখনো আপনি বড়লোক হতে পারবেন। আপনি এমন কোন চাকরি দেখাতে পারবেন, যেই চাকরি সৎভাবে করে কেউ বড়লোক হয়েছে? সত্যিকার অর্থে আপনি ধনী হতে চাইলে যেকোন বিষয়ে নতুনত্য খুঁজার মত আপনার দূরদর্শিতা থাকতে হবে।

অতিত কিভাবে গিয়েছে, বর্তমান কিভাবে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ কিভাবে যাবে এবং ভবিষ্যতে কি ধরনের কাজগুলো জনিপ্রয় হচ্ছে, সেই বিষয় চিন্তা করার শক্তি থাকতে হবে। একজন সত্যিকারের সফল ব্যক্তি সবসময় ভবিষ্যতকে দেখতে পায়। ভবিষ্যতে কি হবে, কি ঘটবে ইত্যাদি আবিষ্কার করার মত ক্ষমতা একজন সফল ব্যক্তির মধ্যে থাকে।

৫। আয়ের হিসাব রাখুন

আপনার যদি নিয়ন্ত্রন  করে টাকা খরছ করার মত অভ্যাস না থাকে, তাহলে আপনি কখনো বড়লোক হতে পারবেন না। প্রবাদ আছে, বসে খেলে রাজার ভান্ডার খালি হয়ে যায়। আপনার যদি আয়ের চেয়ে ব্যয় করার অভ্যাস বেশি থাকে, তাহলে বড়লোক হওয়ার আশা ছেড়ে দেন। অনেক লোক আছে যারা মাসের এক তারিখে চাকরির মাইনেটা হাতে পেলে মাথা ঠিক থাকে না।

মাসের সেলারি পাওয়ার পর ঘরগুষ্টি ও গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে আড্ডা দেওয়ার বাজে অভ্যাস থাকলে কখনো বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন সত্যি করতে পারবেন না। আপনি যে সোর্স হতে টাকা আয় করুন না কেন, টাকার হিসাব অবশ্যই আপনাকে পাই পাই করে রাখতে হবে।

৬। আর্থিক পরিকল্পনা করুন

যে কাজে বা যেকোন বিষয়ে সফলতা পাওয়ার জন্য আর্থিক পরিকল্পনা খুব জরুরী। আর্থিক পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবসা বানিজ্য বা পরিবার মেনটেইন কোনটাই সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে না। সঠিক পরিকল্পনা করে না চল্লে মাস শেষ হওয়ার আগে অন্যের কাছে হাত পেতে টাকা ধার চাইতে হবে। সকল ক্ষেত্রেই পরিকল্পনার বিকল্প আর কিছুই নাই। যে কোন ব্যবসায়ে ‘অর্থায়ন’ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যয় করুন। সোজা কথা হচ্ছে, আয় বুঝে ব্যয় করুন।

৭। ধার বা ঋণ না করার চেষ্টা করুন

যদি প্রতি মাসেই আপনার ধার বা লোণ করে মাস পার করতে হয়, তাহলে আপনি কখনোই নিজের উপার্জনের কিছুই রাখতে পারবেন না। যার ফলে আপনার অর্থের সংখ্যা বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বে। ধার বা লোন নেয়া থেকে বিরত থাকুন। আপনার যে পরিমানে আয় আছে সেই অনুপাতে খরছ করার চেষ্টা করুন। ঋণ করে কেউ কখনো আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধন করতে পারবে না।

৮। সঞ্চয় করুন

সঞ্চয় আপনার জীবনের যেকোন সময় অনেক গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আপনি মিতব্যয়ী হওয়ার চেষ্টা করুন, তা আপনার পক্ষেই লাভজনক। সঞ্চয় করাটা অভ্যাসে পরিণত করুন। খুব অল্প বয়সে ধনী হতে পারবেন। সঞ্চয় করার বিষয়ে পোস্টের নিচের বিস্তারিত আলোচনা করব।

৯। ছোটখাটো ব্যবসা করুন

আপনি যদি চাকুরিজীবি হন, তাহলে চাকরি টাইমের পরে ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কারন শুধুমাত্র চাকরী করে কম বয়সে বেশী অর্থ উপার্জন করা সম্ভব নয়। কেননা আপনি যব বড় চাকরি করুন না কেন চাকরীতে পরিমিত টাকা পাওয়া যায়। আর সরকারী চাকরি হলে, সেই পরিমানটা খুবই ছোট হয়ে থাকে। কাজেই চাকরিজীবিরা বড়লোক হতে চাইলে বা নিজের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে চাইলে অবশ্যই চাকরির পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করার চেষ্টা করুন। 

১০। প্রয়োজন ছাড়া দামি জিনিস না কেনা

আপনার কাছে দামি দামি কাপড়, দামি স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ঘড়ি, শো এবং অন্যান্য উচ্চ মূল্যের বিলাশবহুল আসবাবপত্র থাকলেই আপনি একজন ধনি ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে হাসিল করতে পারবেন না। কারণ আপনার পরিচয় আপনি নিজেই। আপনি একজন ধনি ব্যক্তি হলে সেটা আপনার পরিচয়ে সাবাই আপনাকে চিনবে।

সে জন্য অহেতুক প্রয়োজন ছাড়া দামি জিনিস না কিনে যতটুকো দামের জিনিস প্রয়োজন ঠিক ততটুকো কেনার চেষ্টা করবেন। একটি ১০০০ টাকার প্যান্ট ব্যবহার করে যেকোন জায়গায় যেকোন পরিবেশে যাওয়া গেলে, কেন শুধু শুধু ৫০০০ টাকার প্যান্ট কিনে টাকা নষ্ট করবেন? 

সত্যিকারের ধনী ব্যক্তিরা কখনো অহেতুক টাকার অপচয় করে না। বরংচ তারা টাকা বাচিয়ে কোন প্রয়োজনীয় কাজে সেই টাকা বিনিয়োগ করে এবং বেলাশেষে সেই টাকার অংক দিগুণ করার চেষ্টা করে। আর ধনী হতে হলে এই গুনে গুণান্বিত হওয়া অত্যন্ত জরুরী। তাই এখন একটু কষ্ট করে এই অযথা জিনিসগুলো ত্যাগ করে দিলে তা আপনার ভবিষ্যতকে উন্নত করবে।

অল্প বয়সে কোটিপতি হওয়ার উপায় কি?

আপনি যদি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই লক্ষ্য করেছেন যে, আমার লেখার একদম উপরের প্যারাতে বলেছিলাম, কোটিপতি হওয়ার জন্য টাকা কামানোটা হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু টাকা কামানোর চাইতে আরো গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে টাকা জমানো বা সঞ্চয় করা। আর টাকা সঞ্চয় করার চাইতে আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঞ্চয়কৃত টাকা সঠিক রাস্তার ইনভেস্টমেন্ট করা।

আপনার জমানো টাকা আলমারিতে রেখে দিলে সেই টাকা বাড়বে না, বরংচ কমবে। আজ আপনার আলমারিতে এক লক্ষ টাকা থাকলে এক বছর পর সেই টাকার মান এক লক্ষ টাকা থাকবে না। কারণ ২০২০ সালে যে জিনিস এক লক্ষ টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন, ২০২১ সালে সেই জিনিস এক লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করতে পারবেন না। 

স্বাভাবিক নিয়মে সময়ের সাথে সাথে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বৃদ্ধি পায়। সাধারণত প্রত্যেকটি ছোট, বড় ও মাঝারি জিনেসের প্রতি বছরে প্রায় ৬% করে দাম বৃদ্ধি পায়। সেই হিসেবে আপনার কাছে ১০০ টাকা থাকলে এক বছর সেই টাকার মূল্য তখন হবে ৯৪ টাকা। অর্থাৎ যে জিনিস আপনি ১০০ টাকায় কিনতে পারতেন, এক বছর পর সেই জিনিস কেনার জন্য আপনাকে ১০৬ টাকা ব্যয় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনার কাছে এ লক্ষ টাকা থাকলে, এক বছর পর সেই টাকার মূল্য হবে ৯৪ হাজার টাকা। অথচ আপনি বুঝতেই পারেননি যে, আপানার আলমারিতে থাকা এক লক্ষ টাকা হতে এক বছরে ৬ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।

এখন হয়ত ভাবছেন, তাহলে আমাকে কি করতে হবে? আপনার কাছে থাকা জমানো টাকা কিভাবে ইনভেস্ট করবেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে কিভাবে আপনি টাকা সঞ্চয় করবেন, সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক। কারণ টাকা না থাকলে, টাকা ইনভেস্টমেন্ট করার প্রশ্নই আসে না। কাজেই আগে আপনাকে টাকা সঞ্চয় করতে হবে।

কিভাবে টাকা সঞ্চয় করবো?

কিভাবে টাকা সঞ্চয় করতে হবে, সে বিষয়ে উপরে ১০ টি পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি উপরের সবগুলো বিষয় ভালোভাবে অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে টাকা সঞ্চয় করা আপনার কাছে কোন বিষয় হবে না। তারপরও আপনি কিভাবে একদম প্রাইমারি লেভেল থেকে টাকা সঞ্চয় করা শুরু করবেন, সেটাও আমরা দেখবো।

পৃথিবীর সব কোটিপতিদের জীবন বৃত্তান্ত পড়লে দেখা যায় শুরুতেই কেউ বড়লোক বা কোটিপতি ছিল না। অধিকাংশ কোটিপতিরা তাদের আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় করার মাধ্যমে সঞ্চয়কৃত টাকা সঠিক রাস্তার ইনভেস্টমেন্ট করার মাধ্যমে ধিরে ধিরে কোটিপতি হয়েছেন। টাকা জমানোর বিষয়ে একটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি আমি আরো ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি।

উদাহরণ- একসময় এক রাজা ছিল। সেই রাজার খুব বিশ্বস্ত এক দুষ্ট মন্ত্রী ছিল। কিন্তু রাজা তার দুষ্টমির বিষয়ে কিছু জানতেন না। দুষ্ট মন্ত্রীর প্রতি রাজার আন্তরিকতা দেখে রাজ্যের অন্যান্য সকল মন্ত্রীবর্গ এবং প্রজারা খুব হিংসা করত। যার জন্য একদিন সাবাই মিলে সেই দুষ্ট মন্ত্রীকে বিপদে ফেলে। রাজা তার মন্ত্রীর খারাপ কাজ শুনে খুব রাগ করেন এবং বিশ্বাস ঘাতকতা করার দায়ে থাকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। 

মন্ত্রীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ কার্য্যকর করার দিন রাজা তার মন্ত্রীকে বলেন, তুমি আমার খুব বিশ্বস্ত মন্ত্রী ছিলে, তোমার কোন শেষ ইচ্ছা থাকলে আমাকে বলতে পার। আমি তোমার শেষ ইচ্ছা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। তখন মন্ত্রী বলেন, আমার পরিবারের ভরপোষন করার জন্য প্রতিদিন ১ টাকা করে দিতে হবে এবং সেই টাকার উপরে ডাবল সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ প্রতিদিনের ১ টাকা ও পরের দিন ১ টাকা + আগের দিনের ১ টাকার সুদ সহ মোট ৩ টাকা। এভাবে  চক্রহারে সুদ দিতে হবে।

রাজা বিষয়টি বুঝতে না পেরে মন্ত্রীর শেষ ইচ্ছা পুরনের আশ্বাস দেন। কিন্তু এভাবে চক্রহারে সুদ বাড়তে বাড়তে কয়েক বছর পর রাজা নিশ্ব হয়ে যান। রাজার যত টাকা ছিল সব টাকা পয়সা প্রয়াত মন্ত্রীর পরিবারকে দিতে দিতে একসময় রাজার সহায় সম্বল বিক্রি করে দিতে হয়। 

এই উদাহনের পিছনের আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, বিন্দু বিন্দু বালুকনা মিলে মরুভূমি তৈরি হয় বা ছোট ছোট পানির ফুটা থেকে সাগর সৃষ্টি হয়। আপনি যে পেশায় থাকুন না কেন, আপনার আয়ের কিছু অংশ মাসে মাসে কিংবা সন্তাহে বা প্রতিদিন সঞ্চয় করে রাখলে এক দুই বছর পরে সঞ্চয়ের টাকার পরিমান বিশাল অংকের হয়ে উঠবে।
কিভাবে টাকা সঞ্চয় করবো?
আপনি কি পরিমান সঞ্চয় করবেন, সেটা আপনার আয়ের উপর নির্ভর করবেন। আপনার মোট আয়ের ৫-১০% জমা করে রাখলে মাত্র কয়েক বছরে আপনার বিশাল অংকের টাকা জমা হবে। আপনার যদি টাকার প্রয়োজন কম থাকে, তাহলে আপনার প্রয়োজনানুসারে সঞ্চয়ের পরিমান আরো বৃদ্ধি করতে পারেন। এতেকরে আপনার বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দ্রুত পুরন হবে।

কিভাবে টাকা ইনভেস্টমেন্ট করবেন?

কথায় কথায় অনেকে বলে টাকা থাকলে মাথার ব্রেইন খুলে যায়। আসলে কথাটা একদম খারাপ নয়। আপনার কাছে টাকা থাকলে আয় করার উপায় আপনি নিজে নিজে খুঁজে নিতে পারবেন। আপনার কাছে টাকা থাকলে আপনাকে পথ দেখানোর লোকের অভাব হবে না। তারপরও কিছু সংখ্যক লোক আছে যাদের টাকা থাকা সত্বেও বছরের পর বছর আলমারি টাকা রেখে টাকা নষ্ট করছে।

যখন আপনার কাছে টাকা থাকবে তখন আপনার প্রয়োজনের বিষয় বিবেচনা করে বা আপনি কোনটি করতে পারবেন, সেটি বিবেচনা করে আপনাকে ঠিক করতে হবে, আপনার সঞ্চয়কৃত টাকা কোথায় ইনভেস্ট করবেন। কারণ সঠিক ইনভেস্ট ছাড়া লোকসানে পড়লে আপনার জমানো টাকা হারাতে পারেন। কাজেই কোথায় ইনভেস্ট করবেন, সেটা আপনাকে ভেবে চিন্তে ঠিক করে নিতে হবে। নিচের কয়েকটি কাজে আপনার টাকা ইনভেস্ট করতে পারেন।

১। ক্ষুদ্র ব্যবসা করা

আপনার কাছে ব্যবসা করার মত সুযোগ থাকলে, আপনি অবশ্যই সঞ্চয়কৃত টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন। আপনার কাছে টাকা কম থাকলে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সকল সফল ব্যবসায়িরা শুরুর দিকে ছোট ব্যবসা করে এবং কালক্রমে সফল হওয়ার পর ব্যবসা সম্প্রসারিত করে। একমাত্র ব্যবসা হচ্ছে এমন একটি লাভজনক কাজ, যেটির মাধ্যমে অল্প সময়ে বড়লোক হওয়া সম্ভব।

কি ব্যবসা করবেন, সেটা আপনার অভীজ্ঞতা ও আপনার এলাকার উপর ডিপেন্ড করবে। আপনার স্থানীয় এলকায় যে ব্যবসা লাভজনক মনেহবে সেই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। শুরুর দিকে কিছুটা কঠিন মনে হলেও ধিরে ধিরে ব্যবসা সম্পর্কে আপনার অভীজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবসার আয় বৃদ্ধি করার পথ নিজেই খুঁজে নিতে সক্ষম হবেন।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বুদ্ধিই হলো মূল মূলধন। কেননা চিন্তা ভাবনা না করে বোকার মত ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে, এইটাই স্বাভাবিক। তাই কোথায় কোন ব্যবসায় ইনভেস্ট করলে লভ্যাংশের কিছু অংশ আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে সে ব্যাপারে নিজেকে তৈরি করে নিন। নিজের বুদ্ধি এবং জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ইনভেস্ট করার চেষ্টা করুন এবং এমন স্থানে করুন যাতে আপনাকে লসের মুখে পরতে না হয়।

২। বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকে FD ও বীমা করা

আপনি যদি মনেকরেন যে, আপনি একজন প্রফেশনাল লোক বা ব্যস্ত লোক, আপনার দ্বারা ব্যবসা করা সম্ভব নয়, সে ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন ব্যাংকে এফডি (Fixed Deposit) করতে পারেন। সেই সাথে আপনার ও আপনার পরিবারের সদস্যদের নামে ইন্সুরেন্স করে নিতে পারেন। বিশেষকরে চাকরিজীবিদের জন্য হেল্থ ইন্সুরেন্স করাটা খুব জরুরী।

তাছাড়া ছেলে মেয়েদের জন্য শিক্ষা বীমা করে নেওয়াটা ভালো। এ সব বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনেকরি না। কারণ এগুলো বিষয়ে আমরা সবাই কম বেশি জানি। কাজেই আপনার কাছে টাকা থাকলে সেগুলো আলমারিতে না রেখে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডি (Fixed Deposit) ও বীমা করতে পারেন।

৩। মিউচুয়াল ফ্যান্ড

মিউচুয়াল ফ্যান্ড থেকে টাকা কামানো অনেক লাভ জনক একটি সোর্স। মিউচুয়াল ফ্যান্ড অনেকটা শেয়ার মার্কেট এর মত কাজ করে। আপনি শেয়ার মার্কেট বা স্টক সম্পর্কে অভীজ্ঞতা সম্পন্ন হলে মিউচুয়াল ফ্যান্ডে টাকা জমা করার প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি শেয়ার মার্কেটে কাজ করে রাতারাতি কোটিপতি হতে পারবেন। তবে এ বিষয়ে আপনার পূর্ণাঙ্গ অভীজ্ঞতা না থাকলে হিতের বিপরীত হতে পারে। কাজেই শেয়ার মার্কেটে কাজ করতে চাইলে আগে শেয়ার ও স্টক সম্পর্কে অভীজ্ঞতা অর্জন করে নিবেন।

কিন্তু আমাদের মত যারা চাকরিজীবি বা সাধারণ মানুষ আছে তাদের জন্য শেয়ার মার্কেটে কাজ করা প্রায় অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে আপনি মিউচুয়াল ফ্যান্ডে টাকা জমা রাখতে পারেন। অনেকে মিউচুয়াল ফ্যান্ড বিষয়টি না বুঝতে পারেন। কারণ বাংলাদেশে এটি খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। ভারতে মিউচুয়াল ফ্যান্ড বেশ জনপ্রিয়।

মিউচুয়াল ফ্যান্ড কি?

মিউচুয়াল ফ্যান্ড অনেকটা ব্যাংকের মত কাজ করে। তবে এখানে আপনাকে কিছুটা ঝুকি নিতে হয়।  ভালোমানের মিউচুয়াল ফ্যান্ড কোম্পানিতে টাকা রাখলে লোকসানের সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। মিউচুয়াল ফ্যান্ড মূলত শেয়ার মার্কেটের কাজ করে। আপনার আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তারা শেয়ার মার্কেটে শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে টাকা আয় করে এবং লভ্যাংশের কিছু টাকা আমাদের দেয়। 
মিউচুয়াল ফ্যান্ড
এখানে তারা যেটা করে সেটা হচ্ছে, তাদের কোম্পানিতে শেয়ার মার্কেটের বিষয়ে অনেক অভীজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ লোক থাকে। তারা সবসময় শেয়ার মার্কেটিং নিয়ে রিসার্চ করে। কোন্ মার্কেটে কাজ করলে লাভবান হওয়া যাবে সেটা যাচাই করে তারা টাকা ইনভেস্ট করে। এ ধরনের কোম্পানিতে টাকা ইনভেস্ট করে প্রচুর পরিমানে টাকা আয় করা সম্ভব হয়।

শেষ কথা

আসলে ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে মানুষ অনেক কঠিন ও জটিল অসম্ভব কাজকে সম্ভব করে। এখানে আমরা যে সকল বিষয় তুলে ধরেছি, এগুলোর মধ্যে কোন কঠিন কাজ নেই। শুধুমাত্র আপনি একটু সচেতন নাগরিক হলেই আপনার স্বাভাবিক চলাফেরা বা লাইফস্টাইলের মধ্যে পরিবর্তন এনে আপনি মাত্র কয়েক বছরে অনেক টাকার মালিক হতে পারবেন।